বাবার জন্য ভালোবাসা

আমার বাবা (জুন ২০১৫)

ekaki jobon
  • ৫২
আমার বাবার সাথে আমার ছোটবেলা থেকেই এক ধরনের দুর“ত্ব রয়েছে। দুর“ত্ব থাকার অবশ্য খুব বেশী কারণ নেই। আমার মায়ের সান্নিধ্য আমরা একটু বেশী পেয়েছি বলেই হয়তো এই দুরত্বের বিষয়টা আমার মাথায় ঢুকে গেছে। আমার বাবা একটু বোকা ধরনের মানুষ। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি মায়ের এই বিষয় নিয়ে বাবার বির“দ্ধে তীব্র অভিযোগ ছিল। প্রতিদিনই কোন না কোন বিষয় নিয়ে ছোট খাট ঝগড়া হতো। বাবা হয়তো বাজার থেকে একটা মাছ কিনে এনেছে। মাছ কাটার সময় দেখা গেলো সেই মাছ নরম। আবার তরকারি কাটতে গিয়ে দেখা গেল সেগুলো পঁচা। এইরকম বোকামি আরকি। বাবার ইনকাম খুব বেশী ছিল না। বলতে পারেন টানাটানির সংসার। প্রাইভেট পড়ানো ছিল উপার্জনের প্রধান উপায়। এছাড়া দর্জিও কাজও করতো মাঝে মাঝে। তবে আমাদের পরিবারটা বেশ সুখে শান্তিতে ছিল ।আমাদের পরিবারের মূল ঝড়টা আসলো আমি যখন অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ি। বাবা প্রচন্ড অসুখে পরলো। অনেক পরী¶া নিরি¶ার পর জানা গেলো বাবার হার্টে ছিদ্র আছে। ধার দেনা করে এমনকি মানুষের কাছে হাত পেতে বাবার চিকিৎসা করাই। ঢাকা থেকে ডাক্তার বলেছিলেন অপারেশন করালে বাবা পুরোপুরি ভালো হয়ে যাবেন। তবে যে পরিমাণ টাকার দরকার ছিল তা আমাদের ছিল না। ফলে অপারেশন না করিয়ে আমরা বাড়িতে নিয়ে আসি। বাবা আর কোন কাজ করতে পারেন না। আমরা যেন অথৈ সাগরে হাবুডুবু খেতে লাগলাম। সংসারের এরকম অবস্থায় মা সংসারের হাল ধরলেন। একটা স্কুলে আয়ার চাকরি নিলেন। আমি বেশ কিছু প্রাইভেট শুর“ করলাম। কোনমতে চলতে লাগলো আমাদেও সংসার। বাবাও ওষুধ পত্র খেয়ে ধীওে ধীওে কিছুটা সুস্থ থাকলেন। চলাফেরা করেন। তবে সেই বাবাকে আর পাই না। যে বাবা আমার জন্য হাতে এটা ওটা কিনে আনতো। একসময় আমার অনার্স, মাষ্টার্স শেষ হলো। আমি নিজেও বাবার পথ অনুসক্ষণ করলমা। একটা হাই স্কুলে জয়েন করলাম। আবারো চলতে লাগলো আমাদের সংসার। তবে কিছুদুর এসে আমরা আবারো হোচট খেলাম। আমার চাকরির প্রায় বছর পাচেক পর বাবা আবারো খুব অসুস্থ হয়ে পড়লেন।আবারো বাবাকে ঢাকা নেয়া হলো। তবে ডাক্তার পরী¶া নিরি¶া করে জানালেন হার্টের ছিদ্রর সাথে সাথে একটা ভাল্ব নষ্ট হয়ে গেছে। বাবা আর খুব অল্পসময় আমাদের মাঝে আছে। অপারেশন করলে ভালো হবে। তবে খরচ ৫ ল¶ টাকার মত লাগবে। এই পরিমান টাকা আমরা কোনদিনও যোগাড় করতে পারবো না। সেরকম আতিœয় ¯^জনও নেই যে বাবাকে সাহায্য করতে পারে। এবারো বাবাকে বাড়িতে এনে রেখেছি। তাকে জানানো হয়নি তার একটা ভাল্ব নষ্ট হয়েছে। আরেকটা নষ্টের পথে। ঊাবা এখন বিছানা থেকে উঠতে পাওে না। যদি এই লেখা প্রকাশিত হয় তখন বাবা পৃথিবীতে থাকবেন কি না জানিনা। তবে ছেলে হয়ে বাবার চিকিৎসা করতে না পারার যে কষ্ট তা কাউকে বোঝাতে পারবো না। মাঝে মাঝে একা একা চোখের জল ফেলি। মা যেন দেখতে না পায়। এতে মার কষ্ট বাড়বে। এখনো আমাদের মাঝে সেই দুর“ত্বই আছে। তবে আমি যে বাবাকে খুব ভালবাসি তা কোনদিন বলতে পারিনি। কোনদিন বলতেও পারবো না। বাবা জানতেও পারবে না তার সন্তান তাকে কতখানি ভালবাসতো।
অলোক আচার্য্য
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Rumana Sobhan Porag চমৎকার লিখেছেন।
এটা আমার জীবনের গল্প।

১৮ জুলাই - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪